সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২৫ অপরাহ্ন
Reading Time: < 1 minute
ইতিহাস কখনও বা ইতিহাস হয়ে থাকেনা। কালের বিবর্তে কিংবা অযন্ত-অবহেলার কারণে সঠিক ইতিহাস ভুলে যায় মানুষ। আবার কখনো যা কিছু ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নেওয়ার যোগ্য নয়; সেটাও ইতিহাস হিসেবে দাঁড়ায়- ক্ষমতার দাম্ভিকতা ও প্রচার-প্রসারের কারণে। ইতিহাসের মূলে থাকে একটি যুগের মৌলিক বর্ণনা ও ঐতিহ্যের সমন্বয়। সর্বোপরি সভ্যতা ও সংস্কৃতির পথ ধরেও দীর্ঘকাল ইতিহাসের বিস্তৃতি রয়েছে।
প্রত্যেক সচেতন মানুষের উচিত বংশধারার পরিচিতি সংরক্ষণ করা। তেমনি এই ধারা সংরক্ষণ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় রীতিমত।
কালের অতলে হারিয়ে যাওয়া বংশ-মর্যাদার সুনাম ও গৌরব ফিরিয়ে আনার নিরন্তর প্রচেষ্টা পাকুড়িয়া শরীফের জমিদার দেওয়ান বংশের বেড়েই চলেছে। তাদের পূর্বসূরীদের চেতনায় দেওয়ান-ঈ দরবার এর ইট-পাথরের কাঠামো বিলুপ্ত হলেও নৈতিকতার স্বকীয়তা আজ দৃশ্যমান হয়েছে। প্রচলিত পীর ব্যাবসার প্রথাকে দূরে সরিয়ে সহীহ দ্বীনি আকিদা ও রাসূল (সাঃ) এর সঠিক পথ নির্দেশনা অনুযায়ী উপমহাদেশের বরেণ্য পীরে কামেল হাজী গিয়াস উদ্দীন গেনটু (রহঃ) এর নাম প্রায় হারিয়েই গেছে; সংরক্ষিত হয়নি তার নীতিধারার চিত্রও। পীরত্ব প্রসঙ্গে তিনি তার ব্যাক্তিগত জীবনে বরাবরই এড়িয়ে চলেছেন। সাধারণ মানুষজন তাঁকে সেই আসনে সমাসীন করলেও তিনি কখনো কৌশলগত ভাবেও পীর বা ধর্মগুরু অর্জনের অহংকারী লেবাসকে চাদর মুড়িয়ে মুরিদদের নাকে দঁড়ি দিয়ে হাদীয়া-স্বরূপও কারো নিকট থেকে কোন প্রকার উপহার গ্রহন করেননি। ধর্মব্যাবসাকে উড়িয়ে দিয়ে নিজের জমিদারী সম্পত্তিও বিলিয়ে দিয়েছেন- মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ ইত্যাদি দ্বীনি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অগাধ সম্পদ ও অর্থ দান করেও তিনি নিজের নাম-ডাক চাননি। আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করে কোন প্রকার রিয়া যাতে মনের অভ্যন্তরে না আসে, তার ফিকির করতেন। তিনি রংপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মেহনতী মানুষের পাশে থেকে উপকার করে গেছেন। সাধারণ জীবন-যাপন করতেন। তাঁর পূর্ব-পুরুষ আলহাজ্জ্ব মোহাম্মদ আহমদ (রহঃ) ছিলেন হাদীস শাস্ত্রের বিশারদ ও মহৎ পন্ডিত। তিনিও দুনিয়াবী পরিচিতি ও সুনাম লাভ অপেক্ষা পরকালীন জীবনের ওপর অগাধ বিশ্বাস রাখতেন।
এই মহান সু-পুরুষগণ নিজেদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট এবং গুণের মাধ্যমে তৎকালীন সমাজের মানুষদের শিরোমণি হয়ে থাকলেও ইতিহাসের পাতায় সংরক্ষিত হননি। যার মূলে রয়েছে তাদের নাম-ডাক না চাওয়ার বিরাগ চিন্তাধারা।
লেখক:-ওমায়ের আহমেদ শাওন